রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার পূর্ব দিকে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলায় বাখরাবাদ গ্যাসক্ষেত্র অবস্থিত। তিতাস ও হবিগঞ্জের মতো ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান শেল অয়েল কোম্পানি লিমিটেড বাখরাবাদ গ্যাস ক্ষেত্রটি আবিষ্কার করে। বাখরাবাদ অ্যান্টিলাইন, সিসমিক দ্বারা সংজ্ঞায়িত, একটি সংকীর্ণ, প্রায় ৬৯ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রতিসম ভাঁজ এবং ১০ কিলোমিটার চওড়া। পেট্রোবাংলার পুনঃআনুমান অনুসারে, হবিগঞ্জ গ্যাস ক্ষেত্রের মোট উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের পরিমাণ ১,১৪৫.৩০ বিলিয়ন ঘনফুট (BCF)। গ্যাস ক্ষেত্রটি হতে ১৯৮৪ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে গ্যাস উৎপাদন হয়ে আসছে এবং মে ৩১, ২০২৫ পর্যন্ত মোট মজুদের সর্বমোট ৮৯৪.৬৬৬ বিলিয়ন ঘনফুট বা শতকরা ৬৪.৫০% গ্যাস উৎপাদন করা হয়েছে।
ফিল্ডের তিনটি লোকেশনে মোট ১০ (দশ)টি কূপ খনন করা হয়েছে। এই কূপগুলির মধ্যে ০২ (দুই)টি কূপ (কূপ নং # ১ ও ৯) ভার্টিক্যাল এবং বাকি ৮ (আট)টি কূপ ডেভিয়েটেড। ১৯৯২ সালের জুন মাসে এই ক্ষেত্র থেকে সর্বাধিক ২১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হয়েছে। ২০২৫ সালের মে মাসে এই ক্ষেত্রের ০৬ টি উৎপাদনরত কূপ থেকে গড়ে প্রতিদিন ২৫.৪৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হয় এবং প্রডাকশন টিউবিং এ অতিরিক্ত পানি উৎপাদনের জন্য অন্যান্য ০৪ টি কূপ (কূপ নং # ২, ৪, ৬ এবং ৭) থেকে গ্যাস উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ফিল্ডের উৎপাদিত গ্যাস ০৪ টি সলিড ডেসিকেন্ট সিলিকাজেল টাইপ গ্যাস প্রসেস প্লান্টের মাধ্যমে প্রক্রিয়াকরণ করে গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল) এর বাখরাবাদ-চট্রগ্রাম ট্রান্সমিশন পাইপলাইনে সরবরাহ করা হচ্ছে। গ্যাসের উপজাত হিসেবে দৈনিক প্রায় ২৫.৮১ ব্যারেল কনডেনসেট উৎপাদিত হয়েছে ২০২৫ সালের মে মাসে এ গ্যাস ক্ষেত্রে কনডেনসেট ও গ্যাসের গড় অনুপাত এবং পানি ও গ্যাসের গড় অনুপাত যথাক্রমে ১.০১৫ ব্যারেল/মিলিয়ন ঘনফুট এবং ১৮.৭৭৪ ব্যারেল/মিলিয়ন ঘনফুট।
সেলস লাইনে গ্যাসের চাপ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ডে তিনটি গ্যাস বুষ্টার কম্প্রেসর স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি কম্প্রেসরের কম্প্রেসন ক্ষমতা দৈনিক ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট। মোট ০৩ (তিন)টি কম্প্রেসরের মধ্যে দুইটি কম্প্রেসার চলমান এবং একটি স্ট্যান্ডবাই হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।